শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১০

শেয়ার বাজার-১১: এখন সময় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের

অনেক দিন পর আবার শেয়ার বাজার নিয়ে লিখতে বসলাম। মূলত পর্যাপ্ত সময় না পাওয়াই এই সাময়িক বিরতীর কারন। আগস্টের শেষ সপ্তাহে থিসিস জমা দিতে হবে তবেই সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরার সুযোগ পাব। কানে ধরছি পিএইচডি কারা চিন্তা সপ্নেও আর মাথায় আনব না :) কোন কুক্ষনেই যে চাকরী ছড়ে বিদেশ বিভূইয়ে মাস্টার্স করার শখ জেগেছিল আল্লাহ মালুম। অবশ ফুলব্রাইট ইউ স্কলার্শিপ পাওয়াটাও এই নির্বুদ্ধিতার জন্য দায়ি। পিএইচডি র জন্য শুধু স্টাডি কস্ট স্কলার্শিপ আকারে দেয়ার অফার পেলাম (মানে লিভিং কস্ট নিজের)। এবার বেশ বুদ্ধি করেই টেকনিকালি 'না' করে দিলাম :)। সেপ্টেম্বরে আমার দেশে ফেরা তাই ঠেকায় কে ? এখন শুধু ভালয় ভালয় সময় মত থিসিস টা জমা দিতে পারলেই হয়। আল্লাহ ভরসা।


নিজের ঢোল অনেক পেটালাম এবার বলেন আপনারা সবাই কেমন আছেন? নিশ্চই ভাল কারন মার্কেটের অবস্থা ও ভাল :)। জুনের ৩য় সপ্তায় বাজার পরে গেলেও জুলাই এর শুরুতেই আবার তা উর্ধমুখী হয়েছে। যার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু সুসংবাদ-

১। গেল প্রান্তিকে (জানু-জুন'১০) ব্যাংক খাতের কম্পানিগুলর আশাতিত মূনাফা অর্জন।
২। বীমা ও নন-ব্যাংকিং কম্পানিগুলর ভাল মূনাফা অর্জন।
৩। UCBL এর প্রত্যাবর্তন।
৪। এইমসের লেনদেন শুরু।
৫। ইয়ার ক্লোজিং শেষে বড় বড় ইনিস্টিটিউশনাল বিনীয়োগকারীদের নতুন বছরের জন্য শেয়ার কেনা।
৬। আরো অনেকগুল কম্পানির ফেস ভ্যালু পরিবর্তনের ঘোষনা।

সব মিলিয়ে বাজার এখন চাঙ্গা আর SEC ও এখন পর্যন্ত কোন ইন্টারাপ্ট ঘটায় নি তাই আরো বেশ কিছু দিন এই অবস্থা চলবে বলে আশা করছি, অন্তরত রমজানের ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত। আর পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে রমজানের শেষ ২ সপ্তায়ে বাজার পরতির দিনে যাবে কারন ঈদ পালনের জন্য শেয়ার কেনার তুলনায় বিক্রির চাপ বেড়ে যাবে।

তবে বাজার ভাল অবস্থায় থাকলেও মিচুয়াল ফান্ডগুল থমকে আছে। SEC র নতুন নিয়মের কারনে মিচুয়াল ফান্ডগুল মার্জিল লোন সুবিধা না পাওয়াই এর মূল কারন। আগামীকাল সামিট পাওয়ারের শেয়ার ১০ টাকা ফেস ভ্যালুতে কনভার্ট হবে; এর পর সিরিয়ালে আছে প্রাইম ফাইনান্স। এদের পার্ফরমেন্স আশানরুপ হলে '১০ টালা ফেস ভ্যালু' হুজুগ আরো কিছু দিন বাজারে রাজত্ব করবে।

তবে ব্যাংকিং খাতের ৬ মাস শেষে বেশ ভাল মূনাফা করার সংবাদ এই ইন্ডিকেশনই দেয় যে আগামী দিনগুলতে ব্যাংকিং শেয়ারই বাজারে শক্ত অবস্থানে থাকবে।


গেল ৬ মাসে বিভিন্ন ব্যাংকের অর্ধবার্ষিক পরিচালন মুনাফা:


বিভিন্ন ব্যাংক থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, প্রাইম ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩৩৫ কোটি টাকা, গত বছরের একই সময়ে করেছিল ২৫০ কোটি টাকা। এবি ব্যাংক এবার করেছে ৪০০ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময় করেছিল ২০০ কোটি টাকা। পূবালী ব্যাংক করেছে ২৮৪ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৮০ কোটি টাকা। সাউথইস্ট ব্যাংক করেছে ২৯৫ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৭৭ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক করেছে ৩৬৫ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৬৪ কোটি টাকা। এনসিসি ব্যাংক করেছে ১৮৫ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৪৫ কোটি টাকা। ইউসিবিএল ২২৬ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৩২ কোটি টাকা। ঢাকা ব্যাংক করেছে ১৮১ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১৩০ কোটি টাকা। ব্যাংক এশিয়া করেছে ২১৫ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১০৮ কোটি টাকা। এক্সিম ব্যাংক করেছে ২১০ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১০৭ কোটি টাকা। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২৩০ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ১০৫ কোটি টাকা। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক মুনাফা করেছে ২২০ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৯৩ কোটি টাকা। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১৬০ কোটি, আগের বছর করেছিল ৮১ কোটি টাকা। আল-আরাফাহ্ ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে ১৪০ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময় করেছিল ৮০ কোটি টাকা। ইস্টার্ন ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। এসআইবিএল করেছে ১০৫ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৭৫ কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে ৬২ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৭৫ কোটি টাকা। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক করেছে ১৩৯ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৭১ কোটি টাকা। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক করেছে ১০৪ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৭০ কোটি টাকা। ওয়ান ব্যাংক করেছে ১৬৪ কোটি টাকা, আগের বছর করেছিল ৬৮ কোটি টাকা। সিটি ব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। প্রিমিয়ার ব্যাংক ১১৫ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে, গত বছর করেছিল ৫০ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক ২৫০ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে।

সূত্র: Click This Link

সংযুক্তি : মূল লেখায় বলেছিলাম SEC এখন ও নাক গালানি এই উর্ধগতিরোধে। কিন্তু আমি নিখতে না লিখতেই SEC তার উচু নাক আবার বাজারে ঢোকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে Click This Link এখন দেখা যাক আগামী সপ্তাহ কেমন যায়। মনে হচ্ছে জরুরি হয়ে পড়া কারেকশন হ্য়ত শুরু হবে SEC হস্তক্ষেপে।


সূত্র

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন